ইংরেজি Copyright শব্দটির মধ্যেই এর অন্তর্নিহিত অর্থ লুকিয়ে আছে। আমরা যদি Copy ও Right এভাবে আলাদা করে শব্দটির অর্থ বিশ্লেষণ করি, তবে এর অর্থ দাঁড়াবে Copy করার অধিকার । অর্থাৎ সকল ধরনের সৃষ্টিশীল কর্মই যেমন- সাহিত্য, শিল্পকর্ম, সংগীত, চলচ্চিত্র, সফ্টওয়্যার ইত্যাদি স্রষ্টা বা রচয়িতার অনুমতি ছাড়া কপি, পুনরুৎপাদন, অনুবাদ, রূপান্তর বা অধিযোজন করা কপিরাইট ধারণা, আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি, দেশিয় আইন, নৈতিকতা ও ইতিবাচক বোধের চরম পরিপন্থী।
কপিরাইট আইন
কপিরাইট আইন সর্বপ্রথম ১৭০৯ সালে ইংল্যান্ডে তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের কপিরাইট আইনটি পাকিস্তানের ১৯৬২ সালের কপিরাইট অ্যাক্টের সংশোধিত রূপ। তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের জারিকৃত ১৯৬২ সালের কপিরাইট আইনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এক সংশোধনীর মাধ্যমে “বাংলাদেশ কপিরাইট আইন-১৯৭৪“ হিসেবে প্রচলন করা হয়। এটি ১৯৭৪ হতে ২০০০ সালের ১৭ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
২০০০ সালে বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যাক্ট সংশোধন ও সংহতকরণকল্পে এক অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়, যা কপিরাইট অ্যাক্ট ২০০০ নামে অভিহিত। এই আইনে ১৭ টি অধ্যায় ও ১০৫ টি ধারাসহ বিভিন্ন উপধারায় বিভক্ত। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এটি পুনরায় সংশোধন করে কিছু ধারা সংযোজন ও বিয়োজন করে পুনরায় সংশোধিত আকারে অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়।
২০০৫ সালের উল্লিখিত আইনের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কপিরাইট বিধিমালা, ২০০৬ প্রণীত হয়েছে। তখন থেকে বাংলাদেশে উক্ত আইন ও বিধিমালা দ্বারাই কপিরাইটের বিষয়াবলির সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনা করা হয়ে আসছে। সম্প্রতি ২৮ অক্টোবর ২০২১ সালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে কপিরাইট আইন, ২০২১-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন এই আইনে কপিরাইট-সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে, পাশাপাশি অনেক নতুন বিষয়ের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
শাস্তি ও জরিমানা
কপিরাইট ভঙ্গকারির হতে পারে ছয় মাস থেকে চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। হতে পারে ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। এছাড়াও চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে হতে পারে ১ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। এছাড়া আরও একাধিক বিধান রয়েছে যা মেধাস্বত্ব বা সৃজনশীল সৃষ্টিকে রক্ষা করে প্রকৃত মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করে।